Saturday 5 October 2013

সূরা ফাতিহা - ফজিলত



  • সূরা ফাতিহাকে বলা হয় ''উম্মুল কোরআন '' (কোরআন শরীফ-এর মূল) উম্মুল কিতাব কোরআন এর মা, কোরআন-নুল আজিম মহাগ্রন্থ আল কোরআন বলা হয়, সমস্ত আসমানী কিতাবে যা নাযিল হয়েছে তা সবই বরং তার চেয়ে বেশি হুকুম নাযিল হয়েছে কোরআন শরীফ-এর মধ্যেপুরো কুরআন শরীফ- যা নাযিল হয়েছে তা সবই বর্ণিত রয়েছে সূরা ফাতিহা-এর মধ্যে  সূরাতুল-ফাতিহার আয়াত সংখ্যা প্রথম তিনটি আয়াতে আল্লাহ্' প্রশংসা এবং শেষের তিনটি আয়াতে মানুষের পক্ষ থেকে আল্লাহ্' নিকট প্রার্থনা দরখাস্তের বিষয়বস্তুর মিশ্রণমধ্যের একটি আয়াত প্রশংসা দোয়া এই সূরার মধ্যে খালিক, মালিক, রব, আল্লাহ জাল্লা শানহু-এর পরিচয় বর্ণনা করা হয়েছে
  • এমন কোন মুসলমান পাওয়া যাবে না যে নামায পড়ে অথচ সূরা ফাতিহা জানে নাআবার যারা সূরা ফাতিহা জানে তারা কম বেশি প্রত্যেকেই সূরা ফাতিহার অর্থ সম্পর্কে জ্ঞান রাখেঅতঃপর আল্লাহ পাক-এর নিয়ামতপ্রাপ্ত রসূল আউলিয়ায়ে কিরামগণের পরিচয় তুলে ধরে উনাদের পথে চলার জন্য আদেশ করা হয়েছে

===হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম===


‘‘তোমরা কিরূপ লোক থেকে তোমাদের দ্বীন (ইলম বা নছীহত) গ্রহণ করছো, তা ভালোরূপে লক্ষ করো  এবং যে, আল্লাহর হাতে আমার জীবন-মরণ, আমি তাঁর শপথ করে বলছি, সূরা আল-ফাতিহার দৃষ্টান্ত তাওরাত, ইনজীল, যাবুর সহ অন্য কোন আসমানী কিতাবে তো নেই-, এমনকি পবিত্র আল কোরআনেও এর দ্বিতীয় নেই''
(বোখারী শরীফ, মুসলিম, তিরমিযী, মেশকাত, শরহে নববী, মোজাহেরে হক্ব,শরহুত্ ত্বীবী, মায়ারেফুস সুনান, মেরকাত, লুমাত, আশয়াতুল লুমাততালীকুছ ছবীহ)

  • যে কারণে সূরা ফাতিহা ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল, মুস্তাহাব সব নামাজেই এবং প্রত্যেক রাকায়াতেই পড়াটা অপরিহার্য করে দেয়া হয়েছে সূরায়ে ফাতিহা প্রত্যেক ''রোগের'' ঔষধ বিশেষ( সূরায়ে শেফা) বলা হয়েছে

হযরত খাজা মঈন উদ্দিন চিশতী (রহঃ) কর্তৃক বর্ণিত আক্ষরিক( নেকী):

সূরা ফাতিহা

আলহামদু=শব্দটিতে ৫টি অক্ষর :আছেপাঠকারীকে ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে কোন ভুল ত্রটি থাকিলে ক্ষমা করিয়া দেওয়া হয়

লিল্লাহ=পর্যন্ত ৮টি অক্ষর : পাঠকারীর জন্য বেহেশতের ৮টি দরজা খুলিয়া দেওয়া হয়

রাব্বিল আল আমিন=পর্যন্ত ১৮টি অক্ষর: পাঠকারীকে ১৮ হাজার মাখলুকাতের ইবাদাতের সওয়াব দেওয়া হয়

আর রাহমান=পর্যন্ত ২৪টি অক্ষর:পাঠকারীকে ২৪ ঘন্টার কৃত পাপ হইতে রেহাই দেওয়া হয়

আর রাহিম=পর্যন্ত ৩০টি অক্ষর: পাঠকারী কিয়ামতের মাঠে ৩০ হাজার বছরের পুলসিরাত বিদ্যু গতিতে অতিক্রম করবে

মালীকি ইয়াওমিদ্দিন=পর্যন্ত ৪২টি অক্ষর: পাঠকারীকে ৎসরের পাপ ক্ষমা করা হয়

ইয়া কানাবুদু=পর্যন্ত ৫০টি অক্ষর: পাঠকারীর সহিত কেয়ামতে ৫০ হাজার বছরের সমতুল্য দিনে কৃপা পূর্ণ ব্যবহার করা হবে

ওইয়াকানাসতাইন=পর্যন্ত ৬১টি অক্ষর: পাঠকারীকে আসমান, জমিনে ৬১টি রহমতের দরিয়ার প্রতি বিন্দু পানির সমতুল্য সওয়াব দেওয়া হইবে এবং গুনাহ আমল নামা হইতে ধুইয়া ফেলা হইবে

ইহ দিনাস সিরাত্বাল মুসতাকিম=পর্যন্ত ৮০টি অক্ষর:পাঠকারীকে সরাব পান হইতে বাঁচাইয়া উহার ৮০ দোররা শাস্তি হইতে রক্ষা করিবে

সিরাত্বল্লাজিনা আন-আমতা আলাইহিম’'=পর্যন্ত ৯৯টি অক্ষর: পাঠকারী আল্লাহ তালার ৯৯ নাম অবলম্বনে সমস্ত জিকিরের সওয়াব পাইবে

গাইরিল মাগদুবে আলাইহিম''=পর্যন্ত ১১৪টি অক্ষরপাঠকারীকে কোরান শরীফের ১১৪টি সূরা পাঠকারীর সমষ্টির সওয়াব দেওয়া হইবে

ওয়ালাদ দোয়ালিন=পর্যন্ত ১২৪টি অক্ষরযিনি পাঠ করবেন তিনি লক্ষ ২৪ হাজার পয়গাম্বরের এবাদতের সমষ্টির  সওয়াব পাবেন


<<<<<সূরা আল-ফাতিহার বাংলা অনুবাদ>>>>>

মক্কায় অবতীর্ণঃ আয়াত সাত

''পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্' নামে আরম্ভ করছি''

() যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ্ তাআলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা
() যিনি নিতান্ত মেহেরবান দয়ালু
() যিনি বিচার দিনের মালিক
() আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি
() আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,
() যে সমস্ত লোকের পথ যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ
() তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হযেছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে''


আশারাখি আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি এই সূরাটি নামাজের মধ্যে ইমামসাহেব যেভাবে তেলওয়াত করে ঠিক সেভাবে আমারও নামজে পড়তে পারি আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দান করুক আমিনসুতরাং সুরা  ফাতিহার আমল যে রপ্ত করতে পারবে সে আল্লাহর এমন সব কুদরত প্রত্যক্ষ করবে যা বর্ণনা করা সম্ভব নয়